মৃত্যু!

তুই বারবার আমার ছোট্ট জীবনধারাটাকে
তুই বারবার করে দিয়েছিস এলোমেলো
বড্ড বেশি অগোছালো
তুই বারবার অনেক বড় কিংবা তিল-সম ছোট
আঘাতগুলো আমায় বিশৃঙ্খল করে দেয়ার পরে
আমি যখন নতুন করে জীবন সাজাই
তীব্র ঘূর্ণি-বাত্যার মত আমায় ধ্বংস করেছিস


তুই বারবার যখন আমি ছোট্ট কোন খড়কুটোকে
আশ্রয় করে এক চিলতে আমাকে গড়তে চেয়েছি
আমাকে ভাসিয়ে নিয়েছিস
তুই বারবার যখন একটা প্রবালকে ঘিরে
ধীরে ধীরে সাজিয়েছি লক্ষ লক্ষ নিযুত
দানবাকৃতি ঢেউ হয়ে এসে সবকিছু ভাসিয়ে দিয়েছিস
আমাতে তুই এসেছিস বারবার

তুই বারবার এসেছিস আমাতে
তুই বারবার আমাতে বসত করে
তুই বারবার তৈরি করেছিস তোর স্বপ্ন-সৌধ
ধ্বংসের প্রাচুর্যময় এক প্রাসাদ
তুই বারবার সুন্দরের মাঝে ধ্বংসের নামান্তর
তুই বারবার এসেছিস অতিথির মত
তুই বারবার মৃত্যু।

প্রকৃতির মাঝে সুআদিকাল হতে
যখন এক অসীম জীবকণাকূলের মাঝে
নির্বাসিত হল এক পূর্বনির্ধারিত পাপীষ্ঠদল
তখন থেকে তুই মেতেছিস ধ্বংসলীলায়
তুই বারবার তিথি-হীন কোন সুখস্বপ্নের মাঝে
তুই বারবার মেতেছিস ধ্বংসলীলায়
অতিক্ষুদ্র কিংবা শূণ্যসম অকারণে
তুই বারবার আমাতে তৈরি করেছিস
ধ্বংস আর প্রলয় আর ধ্বংসের মৃত্যুকূপ
যার মাঝে তুই বারবার ধ্বনিত করেছিস
তুই বারবার মৃত্যু।

সৃষ্টির মাঝে তোকে আমি সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি
তোকে দুরে ছুড়ে দিয়ে
কিংবা তোর থেকে অনেক দুরে অজ্ঞাতবাসে
আমি তোর থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছি
কেন দিস নি আমায়-
একমুঠো মুক্তি?
সুদূরে, নিভৃতে এক হিংস্র শীতল স্রোতের মত
তুই বারবার আমার সুখটুকু ভাসিয়েছিস
অতিদূর হতে নেকড়ের মত নিশ্চুপে তুই বারবার
দিগন্ত-বিস্তৃত মহাসমুদ্রের কোন দূরতম গহ্বরে
আমার আনন্দটুকুকে নিশ্চিহ্ন করেছিস-
অকারণে।

তুই বারবার আমাতে ঘর বেধেছিস
বেছে বেছে আমার সুখ আর আনন্দানুভূতিগুলোকে
আমার থেকে বহুদূরে
তোর নির্জন, অশঙ্ক, বোধহীন কারাকক্ষে
তিলে তিলে তাদের অনুভূতিশূণ্য করে
তুই বারবার যন্ত্রণার দর্শন এঁকেছিস
তুই বারবার মৃত্যু।

Comments

Popular posts from this blog

নিকষ

বাংলা কবিতায় ছন্দ ; কিছু প্রাথমিক আলোচনা

স্বাতন্ত্রিক