অবিনশ্বর

তারুণ্য এগিয়ে যেতে চায় আপন ব্রত-বীথিতে;
জীর্ণ-পৃথিবী তাকে করতে চায় লক্ষ্যচ্যুত,
বলে, “চেয়ে দেখ সামনে রাত নামছে;
প্রহেলিকায় ঢাকা পথ, ফিরে এস জীর্ণতায়”।
তারুণ্য বলে, “রাত! সে যে দিনেরই পূর্বাভাস;
সূর্যাস্তই যে ঘোষণা করে আগামী দিনের সূর্যোদয়ের।
ক্ষণিকের প্রহেলিকা সেথায় উড়ে যাবে কর্পূরের মত।
জীর্ণতা যে কাপুরুষের বসন”।

শঙ্কিত অবনী বলে, “সামনে দুর্গম অরণ্য,
তার বাত্যা তোমরা চেন না; তা গ্রাস করবে তোমাদের”।
তারুণ্য বলে, “কণ্টকাবৃত পথই যে চলার অহংকার!
ভীরুতা যে বিপদের আশ্রয়স্থল।
ঘূর্ণীবাত্যাই যে দূর করবে পথের প্রহেলিকা,
উন্মোচিত হবে বিজয়ের দ্বারপ্রান্ত”।


বসুধা ত্রাসে-ভরা নয়নে ফিরে ফিরে তাকায়,
অবাক চোখে চেয়ে দেখে তারুণ্যের জয়যাত্রা;
ঊষার আলোর ন্যায় প্রজ্বলিত হয় প্রহেলিকা,
তবু তা তারুণ্যকে বিভ্রান্ত করতে পারেনা।
ত্রাসে-ভরা অরণ্য আপন ঝটিকায় বিধ্বস্ত হয়।
শঙ্কা তবু তারুণ্যকে গ্রাস করতে চায়,
তারুণ্য পথভ্রষ্ট হয়না।
হৃদয়ের মন্ত্রবলে পরাজিত করে সকল বাধা-নিষেধকে;
জয় করে সকল জরা-ব্যাধিকে।

আতঙ্কিত পৃথ্বী তবু চায় তারুণ্যকে বিভ্রান্ত করতে,
কাতর কণ্ঠে বলে, “আর এগিও না তোমরা, পরাজিত হবে,
ধ্বংস হবে তোমাদের ব্রত, তোমাদের লক্ষ্য আর আদর্শ”
তারুণ্য বলে, “মানুষ নশ্বর, তার ব্রত নয়;
আমরা পরাজিত হতে পারি, আমাদের লক্ষ্য হবেনা
ধ্বংসস্তূপ থেকে তাকে অন্য কেউ তুলে আনবে;
তারুণ্য যে অবিনশ্বর।
আমরা আমাদের বুকের মাঝে ত্রাস-হীন প্রান্তরে,
পরাজিত করব জীর্ণতাকে।
আমাদের এই অবিনশ্বর ব্রতই তোমায় সাজাবে নতুন করে”।

Comments

Popular posts from this blog

নিকষ

বাংলা কবিতায় ছন্দ ; কিছু প্রাথমিক আলোচনা

স্বাতন্ত্রিক