এ রায় আমি মানি না
বিচার!
কিসের বিচার?
কার বিচার?
ওই মানুষের আবরণের নিচে লুকিয়ে থাকা মানুষ নামের পিশাচগুলোর?
তুমি কি মানুষ?
কোন অনুভূতি আছে তোমার?
মানুষ হয়ে তুমি ভুলে গেছ তোমার ভাইয়ের বুলেটে বিদীর্ণ বুক?
ভুলে গেছ তোমার বীরাঙ্গনা বোনের নিরাভরণ আর্ত-চিৎকার?
দুঃখিত, আমি ভুলতে পারিনি!
আমায় এখনও তাড়া করে ফেরে একাত্তরের দুঃস্বপ্নগুলো আর
আমি চিৎকার করতে করতে ঘুম থেকে জেগে উঠি।
দুঃখিত, তোমার মত এই রায় আমিও মানি না।
মানতে পারি না।
আমি আমার দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না।
ওদেরও সার বেধে দাড় করাও।
একাত্তরের মত।
আমি ঝাঁঝরা করি দিই ওদের বুক।
তাই হবে পিশাচগুলো যোগ্যতম বিচার।
হ্যাঁ, আমি তোমার মত সুশীল নই!
হ্যাঁ, আমার আইনের প্রতি কোন শ্রদ্ধাবোধ নেই!
আমি নিকৃষ্ট একজন।
অতি সহজ ধাঁধাও আমি বুঝতে পারি না।
আমি বুঝতে পারি না,
তিনশ’ চুয়াল্লিশটি মৃতদেহও কেন ফাঁসির জন্য যথেষ্ট নয়?
আমি উচ্ছৃঙ্খল, আমি উন্মাদ!
আমি রাজপথে দাড়িয়ে দানবের মত উন্মত্ত চিৎকার করি।
আমি চিৎকার করে বলি, ‘এই রায় আমি মানি না’।
আমি চিৎকার করে বলি, ‘একাত্তর, তুমি আমায় ক্ষমা করো না’।
আমি তোমার এক সাগর রক্তের প্রতিদান দিতে পারি নি।
আমি ক্লান্ত, আমি লজ্জিত।
একাত্তর, তোমার পিশাচেরা এখনও বুক ভরে তোমার বাতাস টেনে নেয়।
সেই একই বাতাসে আমিও বেঁচে আছি।
আমার দম বন্ধ হয়ে আসে_
আমার দম বন্ধ হয়ে আসে,
যখন আমি দেখি, এই বাংলায় পিশাচের মুক্তির দাবিতে হরতাল হয়।
যখন দেখি, এই বাংলায় কসাইয়ের মুক্তির দাবিতে মানুষ পোড়ান হয়।
একাত্তর আমায় ক্ষমা করো না।
আমায় তুমি ক্ষমা করো না, ততদিন পর্যন্ত...
যতদিন না আমি তোমার কসাইদের হত্যা করতে পারি।
আমি চিৎকার করে তোমায় বলছি, চিৎকার করে আবারও বলছি,
‘না, এই রায় আমি মানি না। আমি মানতে পারব না’।
আমি ওদের ডাইনির মত পুড়িয়ে মারার রায় দিয়েছি আমার আদালতে।
দুঃখিত, স্রষ্টা কাউকে একবারের বেশি হত্যার ক্ষমতা দেয় নি।
আমি ওকে তিনশ’ চুয়াল্লিশ বার খুন করতে পারব না।
আমি শুধু রাজপথে দাড়িয়ে চিৎকার করতে পারব, ‘আমি পিশাচের ফাঁসি চাই’।
তাই হবে, এই পিশাচের যোগ্যতম বিচার।
Comments
Post a Comment