বৃষ্টি বলেছে আসবে

বৃষ্টি বলেছে আসবে? সে আসবে?
তবে আসুক না।
এক জোড়া ভেজা নীলিমাচারী কপোতের ডানা ভিজিয়ে দিয়ে,
সেই ডানা থেকে ঝাপটানো নীল শিশিরের জলে,
কচু-পাতাদের টলটলে জলে আশ্রয় করে,
শব্দ বলেছে ভাসবে? সে ভাসবে?
তবে ভাসুক না।
নীল মেঘাচ্ছন্নে আচ্ছন্ন হয়ে,
ময়ূরের বর্ণিল পেখমের নৃত্য;
বৃষ্টি আনমনে দেখবে নৃত্য-সুখ?
তবে সে আসুক।



জলসিক্ত মেঠো পথে, নির্ঝরে;
বৃষ্টি বলেছে আসবে? সে আসবে?
তবে আসুক না।
সেই রাস্তা ধরে জাগ্রত থাকা অনেকে জলকণা;
তার মাঝে থেকে হঠাৎ আবির্ভূত,
এক বৃষ্টিস্নাতা গ্রাম্য কিশোরী!
বৃষ্টি বলেছে দেখবে? সে দেখবে?
তবে দেখুক না।


শরতের প্রথম সকালের শীতে,
কাশবনের সাদার ওপরে ভাসা
তুলো তুলো মেঘ বলেছে ভাসবে?
তবে, ভাসুক না।
কিংবা, সে হয়ে উঠুক, হয়ে যাক আষাঢ়ের কালো।
সেই ধূসর কৃষ্ণ নিকষ মেঘমালা
সেই গুরুগম্ভীর খুব বজ্রপাতের শঙ্খনিনাদদের;
কাশবন বলেছে শুনবে? সে শুনবে?
তবে শুনুক না।


দিঘির কাকচক্ষু জলেতে ভেসে
বৃষ্টি বলেছে আসবে? সে আসবে?
তবে আসুক না।
সেই মুক্তোদানার ন্যায় বৃষ্টি কণায়;
নীলিমা কেঁদে ভাসাবে তার বুক?
সেই অনেক শীতল স্নিগ্ধতায় ভরা প্রথম পরশে,
খুব রিমঝিম শব্দ;
বৃষ্টি বলেছে শুনবে? সে শুনবে?
তবে শুনুক না।


সেই প্রবল নগ্ন সৌন্দর্যের মাঝে;
এক ছায়া ঘেরা আমগাছে থাকা,
একজোড়া চড়ুই পাখির কোলাহল
বৃষ্টির নীল ছন্দে তাদের নাচের ধুম;
বৃষ্টি বলেছে দেখবে? সে দেখবে?
তবে সে আসুক।

বৃষ্টি আসুক না।

Comments

Popular posts from this blog

নিকষ

বাংলা কবিতায় ছন্দ ; কিছু প্রাথমিক আলোচনা

স্বাতন্ত্রিক